এনজিও ব্যুরোর বিধিসম্মত একধাপ-ভিত্তিক সেবা দানের ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিতে এবং রোহিঙ্গা ত্রাণ প্রকল্প অনুমোদনের অহেতুক জটিলতা বিলুপ্ত করার আহবান

0

ঢাকা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৭। আজ ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় এনজিও এবং নাগরিক সমাজের ফোরাম CCNF (Cox’s Bazar CSO NGO Forum- রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জরুরী মানবিক সহায়তা কাজে নিযুক্ত আছেন) এর বক্তারা অবিলম্বে এনজিও ব্যুরোর ৪৩ নং আইন, ২০১৬ পুনর্বহাল এবং রোহিঙ্গা ত্রাণ প্রকল্প অনুমোদনে অহেতুক জটিলতা বিলোপ করার দাবী জানান। তারা আরো জানান, স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তি পত্র গ্রহণ করার বিধান প্রবর্তনের কারণে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে মূলত ত্রাণ সংক্রান্ত কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। কোস্ট ট্রাস্ট এর নির্বাহী পরিচালক এবং CCNF (Cox’s Bazar CSO NGO Forum) এর কো-চেয়ার রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ফোরামের অপর কো-চেয়ার এবং পালস্ এর নির্বাহী পরিচালক আবু মোর্শেদ চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনের অন্যান্যের মধ্যে এডাবের পরিচালক একেএম জসিম উদ্দিন এবং ISDE নির্বাহী পরিচালক নাজের আহমেদও বক্তব্য রাখেন।

আবু মোর্শেদ চৌধুরী তার সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনায় বলেন, যদি এনজিও ব্যুরোর অনুমোদন প্রক্রিয়ার এই বিধান অব্যাহত থাকে তাহলে অচিরেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। বিশেষকরে, ডিপথেরিয়া এবং ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। পাশাপাশি এই বিধানের ফলে এনজিওসমূহ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে আনতে বাধ্য থাকবে। এনজিও ব্যুরোর বিধিসম্মত কর্তৃত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার উপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি তিনি ৬টি দাবী জানান- (১) গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর অফিসে আইএনজিওদের প্রতিনিধি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এনজিও ব্যুরোতে জমা দেওয়া প্রতিটি রোহিঙ্গা ত্রাণ কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রকল্পসমূহের অনুমোদন প্রদান, (২) এই অনুমোদন অবশ্যই কক্সবাজার জেলা প্রশাসক থেকে প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ি হতে হবে- কারণ তার আইনগত তত্ত্বাবধানেই বর্তমান প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হচ্ছে, (৩) যেই সময়সমূহ নস্ট হয়েছে তা নতুন অনুমোদনে কাউন্ট করতে হবে, (৪) জরুরী এই ত্রাণ কার্যক্রমসমূহের সময়সীমা ৩ মাস থেকে বাড়িয়ে ১২ মাসে উন্নীত করতে হবে, (৫) ব্যুরোকে অবশ্যই সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, শিক্ষা এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনী কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রকল্পসমূহের উপর গুরুত্ব দিতে হবে, এবং (৬) ব্যুরোতে একজন পূর্ণাঙ্গ মহাপরিচালক নিয়োগ দিতে হবে- কারণ গত ২ মাস ধরে পদটি খালি রয়েছে।

একেএম জসিম উদ্দিন বলেন, এনজিও ব্যুরো কর্তৃক নিবন্ধিত এনজিওগুলোর জন্য ধর্মীয় জঙ্গিবাদের উত্থানে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট কোন প্রমাণ নেই বরং মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনা বজায় রেখে ধর্মনিরপেক্ষতা চেতনার প্রসার করে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। বরঞ্চ এনজিওসমূহ যদি তাদের কার্যক্রম উঠিয়ে নিয়ে যায় তাহলে ট্রমার মধ্যে থাকা এইসব রোহিঙ্গারা দ্রুত জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়তে পারে। ISDE নির্বাহী পরিচালক নাজের আহমেদ বলেন, সেনাবাহীনি ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় এনজিওসমূহ যেভাবে রোহিঙ্গা ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তা প্রশংসার দাবী রাখে। যদি এনজিওসমূহ তাদের কার্যক্রম উঠিয়ে নেয় তাহলে ইউএন সংস্থাসমূহ একচেটিয়াভাবে আধিপত্য বিস্তার করবে এবং যা কিনা ব্যয়বহুলও বটে। যেমন, বর্তমানে কক্সবাজারে ১০০০ বিদেশী কাজ করছে যাদের প্রতিজনের পেছনে প্রতিদিন ৩০০ ডলায় ব্যয় হচ্ছে। তার অর্থ হলো, তাদের জন্য প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, সময় ক্ষেপনের কারণ দেখিয়ে দাতাসংস্থাসমূহ তাদের জরুরী তহবিল Letter of Intent বাতিল করছেন এবং প্রকল্প অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত অর্থ ছাড় করতে চাচ্ছে না।
Please Download [Bangla Press] [English Press] [Bangla Position Paper] [English Position Paper]
Photos

 
   
   

Newspaper

   
   
   
   
   
   
   
   
   
Social Sharing

Leave A Reply