করোনা সংকট মোকাবেলায় কক্সবাজারের প্রতি সরকার এবং দাতা সংস্থাসমূহের বিশেষ নজর দিতে হবে : ব্যাপক সামাজিক উদ্যোগ প্রয়োজন: সাময়িকভাবে হলেও হলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ৪জি ইন্টারনেট সেবা পুনরায় চালু করতে হবে

0

ঢাকা ও কক্সবাজার, ৩০ মার্চ ২০২০। কক্সবাজারে বিভিন্ন উন্নয়ন ও মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়নরত ৬০টি স্থানীয় এবং জাতীয় এনজিও’র নেটওয়ার্ক কক্সবাজার সিএসও এনই এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) একটি অনলাইন সংবাদ সম্মেলন এবং আলোচনা সভার আয়োজন করে। ঢাকা এবং কক্সবাজার থেকে সাংবাদিকগণ এই সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। এতে উল্লেখ করা হয় যে, করোনা সংকট মোকাবেলার ক্ষেত্রে কক্সবাজার জেলা সরকার এবং দাতাসংস্থাসমূহের কাছ বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে, কারণ জেলাটি মানবিক উন্নয়ন সূচকে তূলনামূলকভাবে পিছিয়ে আছে এবং এই জেলায় পায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের আগমনের পরে সামাজিক শক্তিগুলোর যেভাবে উদ্যোগ নিয়েছিলো, এই করোনা সংকট মোকাবেলায় একইভাবে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এতে অংশগ্রহণ করা সাংবাদিকগণ, বিশেষ করে উখিয়া–টেকনাফের সাংবাদিকগণ রোহিঙ্গা শিবির এলাকা এবং উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় সাময়িকভাবে হলেও ৪জি মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট সেবা চালুর দাবি জানান। এতে করে সবার পক্ষে করোনা মোকাবেণলার প্রস্তুতি গ্রহণ এবং গুজব মোকাবেলা সহজ হবে। অন্যদিকে এতে করে রোহিঙ্গাদের পক্ষে প্রয্জোনীয় স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সহজ হবে। সাংবাদিকরও সহজে সংবাদ সংগ্রহ এবং প্রেরণ করতে পারবেন ।
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন সিসিএনএফ’র তিন কো-চেয়ার কোস্ট ট্রাস্টে’র পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আরও অংশগ্রহণ করেন পালস’র আবু মোর্শেদ চৌধুরী, মুক্তি কক্সবাজার’র বিমল দে সরকার, দুর্যোগ ফোরাম’র নঈম গওহর ওয়ারা, নাহাব’র আব্দুল লতিফ খান, এডাব’র জসিম উদ্দিন, এফএনবি’র রফিকুল ইসলাম। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, এডাব এবং এফএনবি দেশের এনজিওদের বৃহত্তর দুটি নেটওয়ার্ক।
আলোচনায় প্রধান যে বিষয়গুলো উঠে আসে সেগুলো হলো: (১) আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার উচিৎ পুরো কক্সবাজার জেলাকেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা, (২) সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে রোহিঙ্গা শিবির এবং স্থানীয় এলাকাগুলোকে ব্যাপক সচেতনতা ও কিছু মাত্রায় বাধ্যবাধকতা প্রয়োজন, (৩) শিবিরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সকল দর্শনার্থীদের এবং কর্মরত সবারই তাপমাত্রা পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। (৪) এটা প্রমাণিত যে, শেষ পর্যন্ত স্থানীয়দেরকেই রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর দায়িত্ব নিতে হবে, কারণ তারা এখানেই বসবাস করেন। তাই রোহিঙ্গা সংকট ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্থানীয় এনজিও, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় প্রশাসনের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে। কোন সন্দেহ নেই যে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কারিগরি সহযোগিতা প্রয়োজন, কিন্তু ভবিষ্যতে খরচ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এবং সামগ্রিক সমাজ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে, অবিলম্বে স্থানীয়করণ রূপরেখা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। (৫) কক্সবাজারের দিনমজুর এবং হোটেল শ্রমিক, জেলেসহ নি¤œ আয়ের মানুষদেরকে বিশেষ সহায়তা দিতে হবে। (৬) শহরে প্রচুর পথশিশু আছে, তাদেরকে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। (৭) যেসব এনজিও এবং সংস্থা পথশিশু, প্রতিবন্ধি এবং অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে কাজ করে, তাদের জন্য বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া প্রয়োজন। (৮) সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে স্থানীয় এবং জাতীয় এনজিওগুলোতে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশিম তাদেরকে নিজস্ব উদোগে পুরো জেলায় বিভিন্ন ত্রাণ ও সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। (৯) জেলার ডাক্তার, নার্স এবং ক্লিনিক মালিকদেরকে উজ্জিবিত করতে জেলা প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে তাঁরা চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যান। তাদের জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিতে নিরাপত্তা উপকরণ নিশ্চিত করতে হবে। (১০) করোনা সংকট মোকাবেলায় গৃহীত প্রকল্পগুলোর আবেদন (এফডি ৭) ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনুমোদনের জন্য এনজিও ব্যুরোকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অনলাইনে আবদেন জমা এবং অনুমোদন প্রক্রিয়া চালু করা যেতে পারে।
করোনা সংক্রমামণের মূল কারণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং বিদেশীরা-এ ধরনের ভূল ধারণার বিরুদ্ধেও সচেনতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
বার্তা প্রেরণ:
রেজাউল করিম চৌধুরী +৮৮০১৭১১৫২৯৭৯২মোস্তফা কামাল আকন্দ, ৮০১৭১১৪৫৫৫৯১
Newslink

Social Sharing

Comments are closed.