বিদেশীদের পেছনেই ব্যয় হচ্ছে মোট বরাদ্দের প্রায় ৭০ শতাংশ, বঞ্চিত হচ্ছে রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের জনসাধারণ

0

কক্সবাজার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭। কক্সবাজার সিএসও-এনজিও ফোরাম এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ২০১৮ উদযাপন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের সিভিল সোসাইটি ও এনজিওর নেতৃবৃন্দ। মানব বন্ধন অনুষ্ঠানের মডারেটর হিসেবে ছিলেন জনাব আবু মোরশেদ চৌধুরী এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, জনাব রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক কোস্ট ট্রাস্ট, মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী জনাব বিমল চন্দ্র সরকার, ব্র্যাকের আঞ্চলিক প্রধান জনাব অজিত নন্দি, সাংবাদিক জনাব মোঃ আলী জিন্নাত, জনাব ফজলুল কাদের চৌধুরী, জনাব নুরুল ইসলাম ও কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক জনাব মকবুল আহমেদ। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন মুক্তি, কোস্ট ট্রাস্ট, একলাব, ব্র্যাক, নোঙ্গর, ইপসা, পালস, রেডিও টেকনাফ এর প্রতিনিধিবৃন্দ। ফোরাম কক্সবাজারে দিবসটির বিষয় প্রতিপাদ্য ঠিক করে- “কক্সবাজারের সমাজ, মানবাধিকারের সমাজ, রোহিঙ্গাদের সাথে স্থানীয়দের অধিকারকেও সমুন্নত রাখুন”।

কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, মায়ানমারের বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী মি. মং জার্নি বলেছেন, গনহত্যা এখন একটি লাভজনক ব্যবসা। মায়ানমারে যে গণহত্যা চলছে তাতে মায়ানমারে সামরিক জান্তা, চীন ও ভারতের কোম্পানীগুলো লাভবান হবে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা এসেছে, এতে অনেকেরই লাভ হচ্ছে। কারণ কক্সবাজারে প্রায় ১০০০ বিদেশী আইএনজিও ও ইউএন এক্সপার্ট কাজ করছে এটা কক্সবাজারের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন। প্রতিজনের পিছনে দৈনিক ব্যয় হচ্ছে কমপক্ষে ৩০০ ডলার। অর্থাৎ তাদের পেছনে প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। অথচ কক্সবাজারের স্থানীয় এনজিও কাজ করতে পারছে না। তিনি আরো বলেন, নেপালে ভুমিকম্পের পরে আইএনজিওদের সরাসরি কাজ করা থেকে সরকার নিষিদ্ধ করে এবং ফিলিপাইনের সরকারও সাইক্লোন হাইওয়ানের পর একই রকম সিদ্ধান্ত নেয়। তাই বাংলাদেশ সরকার ও রাজনীতিবিদদের কে এইরকম সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্থানীয় এনজিওদের মাধ্যমে কাজ করাতে হবে।

মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী জনাব বিমল চন্দ্র সরকার বলেন, সারা বিশ্বে আজ মানবাধিকার লঙ্ঘিত। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রথমে কক্সবাজার বাসিই গ্রহন করেছে। কিন্তু এখন স্থানীয় কক্সবাজারবাসীই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ। স্থানীয় মানুষের কষ্ট আরো বেড়ে গেছে। তাদের নেই পর্যাপ্ত খাদ্য, কর্মসংস্থানও কমে গেছে। তাই স্থানীয়দের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে। আমাদের দীর্ঘ দিনের প্রশিক্ষিত কর্মী বেশি বেতনে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা এগুলো বন্ধের জন্য আইএনজিওদের আহ্বান জানাচ্ছি। সাংবাদিক জনাব মোহাম্মদ আলী জিন্নাত বলেন, রোহিঙ্গাদের উপর যে নির্যাতন হয়েছে তা শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, গনহত্যা। অথচ বিশ্ব জনমত কার্যকরভাবে মায়ানমারের উপর কোন চাপই প্রয়োগ করতে পারছে না। পাশাপাশি এই জন শ্রোতের জন্য ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগন। কক্সবাজারের বিশিষ্ট সাংবাদিক জনাব ফজলুল কাদের চৌধুরী রাখাইন রাজ্যের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের তথাকথিত বন্ধু রাষ্ট্র ভারত, চীন, রাশিয়া আমাদের প্রস্তাবে সমর্থন দেয়নি বরং তারা বাধা দিয়েছে। বাংলাদেশ যেই দিন মায়ানমারের সাথে চুক্তি করেছে, সেইদিনই আরো রোহিঙ্গা মায়ানমার হতে বাংলাদেশে এসেছে। তাহলে কিসের চুক্তি হলো? তিনি অং সাং সুচির কর্মকান্ডের কঠোরভাবে সমালোচনা করেন।

মানববন্ধনে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপরোক্ত বিষয়ের উপর একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়, উক্ত সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক জনাব আলী হোসেন। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারনে কক্সবাজারের আর্থ ও সামাজিক জীবন কি প্রভাব পবে তার উপর গবেষণা প্রনয়ণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। মানববন্ধন এবং সেমিনারের মডারেটর কক্সবাজার সিএসও ফোরামের কো-চেয়ার আবু মোর্শেদ চৌধুরী গত ৮ ও ৯ ই ডিসেম্বর টেকনাফ ও উখিয়াতেও এধরনের সমাবেশের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, শরণার্থীদের জন্য আসা বিদেশী সাহায্যের প্রায় ৭০% বিদেশী এক্সপার্টদের জন্য ব্যয় হচ্ছে, অথচ বাংলাদেশীরা দুযোর্গ ব্যবস্থাপনার জন্য বিশ্ব খ্যাত। তিনি আইএনজিও ইউএন এর সকল বিদেশী সহায়তার পুর্ণ স্বচ্ছতা ও স্থানীয় জনগন ও সরকারের প্রতি দায়বদ্ধতা দাবি করেন। সবশেষে তিনি দিবসটি পুরো কক্সবাজার জেলায় সফলভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সকল সিএসও এনজিও নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। Please download [Bangla Press]
Photos

   
   
   

News paper

   
   
   
   
 
Social Sharing

Leave A Reply