UNRR-এ CCNF অবস্থান: রোহিঙ্গা কর্মসূচি ব্যবস্থাপনার মূল ভিত্তি হতে হবে অন্তর্ভুক্তি, স্থানীয়করণ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিসমূহ

0

খসড়া, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

প্রস্তাবিত জাতিসংঘের রোহিঙ্গা প্রতিক্রিয়া (UNRR) ব্যবস্থায় ধারাবাহিক অতীত অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত স্থানীয়দের অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিতে হবে

রোহিঙ্গা কর্মসূচি ব্যবস্থাপনার মূল ভিত্তি হতে হবে অন্তর্ভুক্তি, স্থানীয়করণ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিসমূহ

১. এসইজির মতো সমন্বয়কারী সকল কাঠামোতেই স্থানীয়দের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। রোহিঙ্গা রেসপন্স (আরআর) নিয়ে মন্তব্য করার জন্য হয়তো ভবিষ্যতে আমাদের কাছে কোনো উৎস থাকবে না, ইউএনআরআর-এ গণতান্ত্রিক উপায়ে স্থানীয়দের অংশগ্রহণের ব্যাপারে খুব অল্পই বলা হয়েছে। ইন্টার এজেন্সি স্ট্যান্ডিং কমিটি (আইএএসসি) নির্দেশিকায় স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিও-কে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। আশংকা করা হয় যে, কিছু পক্ষ আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোকে সুবিধা পাইয়ে দিতে আইএএসসি’র উল্লেখিত সংজ্ঞাগুলো এড়িয়ে যেতে চায়। জাতীয় এবং স্থানীয় এনজিওগুলি রেজাউল করিম চৌধুরী এবং আবু মুর্শেদ চৌধুরীকে জাতীয় ও স্থানীয় এনজিও প্রতিনিধি হিসাবে স্ট্র্যাটেজিক এক্সিকিউটিভ গ্রুপ (এসইজি)-এর জন্য ভোট দিয়ে মনোনীত করায়, আমরা অন্তত মতামত জানানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পেতাম, এবং আমরা সেটা সাফল্যের সঙ্গেই করেছি। যেমন জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানিং (জেআরপি)- সহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা যথাসময়ে মতামত দিয়েছি, এক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সবসময়ই ছিলো রোহিঙ্গাদের কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত জাতিসংঘের সংস্থা এবং আইএনজিওসমূহ ইতিবাচক সম্পৃক্ততাসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে। আমরা আমাদের সিসিএনএফ ওয়েবসাইটে (www.cxb-cso-ngo.org) আমাদের মতামতগুলো প্রকাশ করেছি। । গত দুই মাসে এসইজি মিটিং হচ্ছে না, আমরা এই বিষয়ে এসইজি’র তিনজন কো-চেয়ারকে ইমেল দিয়েছি। ইউএনএইচসিআর থেকে মিঃ জোহানেস জানিয়েছেন যে, এসইজি’র বেশিরভাগ সদস্য ছুটিতে থাকায় সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না, এমন নয় যে, তারা আমাদের এসইজি থেকে বাদ দিয়েছেন। কিছুদিন আগে আমরা জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করেও আমাদের উদ্বেগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছি (যেমনটি আমরা তাঁকে ২৬ জুন প্রেরিত স্মারকলিপিতে করেছিলাম)। আমরা ১৩ জানুযারি কনসালটেন্ট মিঃ অ্যান্ডি বারশের প্রতিবেদনের উপরও মন্তব্য করেছি, যা এই লিংক থেকে ডাউনলোড করা যাবে:

২. এসইজে-এর কো-চেয়ারদের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা। আমরা তিন কো-চেয়ারের প্রচেষ্টাকে সম্মান করি। আমাদের মনে হয়, তাঁরা কক্সবাজার পর্যায়ে যতটা সম্ভব ব্যবস্থাপনা কর্তৃত্ব বিকেন্দ্রীকরণ করতে চান। আমরা এটাও মনে করি যে, জাতীয় পর্যায়ে UNRC এর আরও অনেক কাজ রয়েছে, আমাদের এমনভাবে কাজ করা উচিত যাতে তিনি অন্যান্য বিষয়ে মানসম্পন্ন সময় দিতে পারেন। কিন্তু আমাদের উদ্বেগ হলো যে (ক) ISCG এবং HoSoG -এ স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিওসমূহের প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত, যে প্রতিনিধিত্ব সংশ্লিষ্টদের দ্বারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হতে হবে, শুধুমাত্র কার্যক্রমের আওতা দিয়ে প্রতিনিধিত্ব নির্ধারণ করা উচিৎ নয়, (খ) আমরা মনে করি, বাংলাদেশের সরকারী পর্যায়ে বা ন্যাশনাল টাস্কফোর্স পর্যায়ে নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যেখানে UNRC এবং এসইজি’র অন্য দুই কো-চেয়ারের অংশগ্রহণ। এসইজি’র সভার সংখ্যা কমানো যেতে পারে, (গ) ISCG এবং NGOP নেতৃত্বকে বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ের সুশীল সমাজের কর্মীদের সুযোগ দিতে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে।

৩. সিসিএনএফ একটি স্বাধীন সংস্থা, কিন্তু আমরা, স্থানীয় এবং জাতীয় এনজিওসমূহ, এনজিওপির সাথে সম্পর্ক বজায় রাখি। আমরা স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিওসমূহের সাথে যে কোনও সাধারণ অবস্থানকে স্বাগত জানাই, এনজিওপিকে সে জন্য চেষ্টা করা উচিৎ। আমরা ‘The Coordination System for the Rohingya Response in Bangladesh….’ শিরোনামের একটি রচনা পেয়েছি, সঙ্গে ছিলো UNRR Meeting note 31st August, Notes on Sector Streamlining 12 September. এনজিও প্ল্যাটফর্ম থেকে একটি ইমেইলে এগুলো পাঠানো হয়েছে। আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে, আমাদের প্রতিনিধিত্ব শুধুুমাত্র এনজিওপির মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ করা উচিত নয়। এর অর্থ এই নয় যে, আমরা এনজিওপিকে বিচ্ছিন্ন করছি। আমরা বিশ্বাস করি যে, স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিওগুলিকে সাধারণ ন্যূনতম অবস্থানের একটি স্তরে নিয়ে আসার জন্য এনজিওপি’র একটি অন্যান্য সুযোগ রয়েছে, তাদের সে জন্য চেষ্টা করা উচিত। একইসঙ্গে আমরা আবারও বলতে চাই যে, আমরা আমাদের নিজস্ব অবস্থান নিতে সক্ষম এবং আমরা সরাসরি যোগাযোগ রাখতে চাই। আমরা এবং CCNF যা করছি তা স্থানীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সর্বোত্তম স্বার্থে। আমরা এমন একটি পরিবেশ খুঁজছি, যেখানে স্থানীয় এনজিওগুলি সার্বভৌমত্ব, জবাবদিহিতা এবং স্থায়িত্বশীলতার সঙ্গে বিকশিত হতে পারে, যা গ্র্যান্ড বারগেইন ২.০ (২০২২), প্রিন্সিপাল অব পার্টনািরশিপ (২০০৭), চার্টার ফর চেঞ্জ (২০১৫), এবং নিউ ওয়ে অব ওয়ার্ক (২০১৬)– এর মতো দলিলগুলোতে কল্পনা করা হয়।

৪. CCNF একটি স্থানীয় ও স্বাধীন নেটওয়ার্ক যার কাজ জ্ঞান-ভিত্তিক অধিপরামর্শ। আমরা এই সত্যটি পুনর্ব্যক্ত করতে চাই যে CCNF নাগরিক সমাজের একটি স্থানীয় এবং স্বাধীন নাগরিক নেটওয়ার্ক, যা ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে। এর অবদান অতীতে SEG এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা দ্বারা ইতিমধ্যে স্বীকৃত। এটি প্রমাণ করেছে যে, এটি জ্ঞানভিত্তিক একটি স্বাধীন ম নেটওয়ার্ক। এটি ইন্টার-এজেন্সি স্ট্যান্ডিং কমিটি (IASC) নীতি এবং নির্দেশিকা, গ্র্যান্ড ব্যার্গেন ২.০, নিউ ওয়ে অব ওয়ার্ক, এবং চার্টার ফর চেঞ্জের আলোকে সরকার এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলির জন্য একটি খুব গঠনমূলক এবং ইতিবাচক সম্পৃক্ততার ভূমিকা পালন করেছে। উল্লেখিত দলিল/ব্যবস্থাগুলো terms of reference of the localization task force জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি নথি দ্বারা স্বীকৃত। আমাদের আশংকা সমন্বয়ের বিষয়ে বর্তমান ইউএনআরআর দলিলটিতে খুব কমই ধারাবাহিকতা রয়েছে। যা ইতিমধ্যে আমাদের কাছে আছে সেই রকম ব্যবস্থা নতুন করে আবিষ্কার করতে গিয়ে সময় অপচয় করা ঠিক হবে না। টঘজজ-এর উচিত জাতিসংঘের পূর্ববর্তী প্রতিবেদনগুলো বিবেচনা করা এবং এছাড়াও IASC policy guidelines on localization and promoting local CSOs -এর নীতিগুলি পর্যালোচনা করা।

৫. প্রস্তাবিত ব্যবস্থার উপর UNRR দলিলের বিষয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ। এই দলিলে আমরা যা পেয়েছি:

ক COAST এবং UNRR নামে নতুন কমিটি, এই কমিটিগুলি কিভাবে ISCG এবং SEG-কে প্রতিস্থাপন করবে বা এই চার ধরণের কমিটি কিভাবে চলবে তা উল্লেখ করা হয়নি দলিলটিতে। স্থানীয় ও জাতীয় এনজিওগুলো কিভাবে উল্লেখিত কমিটিগুলোতে অংশগ্রহণ করবে, উল্লেখ করা হয়নি সে বিষয়েও।

খ. এনজিওগুলোর প্রতিনিধিত্ব নির্ধারিত হবে তাদের কর্মসূচি বা কার্যক্রমের পরিধির উপর ভিত্তি করে, যাদের আবার আসতে হবে এনজিওপির মাধ্যমে। এর অর্থ স্থানীয় এবং জাতীয় এনজিওগুলির জন্য খুব সীমিত সুযোগই থাকবে।

গ. সাম্প্রতিক অতীতে পূর্ববর্তী বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন বা দলিলের মতো এটি জাতিসংঘ এবং ও IASC নীতির আলোকে স্থানীয় এবং জাতীয় এনজিও-এর কথা উল্লেখ করেনি। এখানে শুধু ‘বাংলাদেশী এনজিও’ শব্দগুচ্ছ উল্লেখ করা হয়েছে, যা প্রকৃতপক্ষে রোহিঙ্গা কর্মসূচিতে স্থানীয়করণের ধারণা বা মূল ভিত্তি নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি করে।

ঘ. শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনাররের সঙ্গে কিভাবে বিভিন্ন বিষয়ে সমন্বয় করা হবে, সে সম্পর্কে কিছুই নেই এই দলিলটিতে, অথচ তিনি সরকারের সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্বকারী এবং অনেক চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। এমনকি উল্লেখ করা হয়নি, রোহিঙ্গা শিবির এবং সমগ্র কক্সবাজার জেলায় এনজিও কার্যক্রম দেখভালের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসকের বিষয়েও কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

৬. সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যসমৃদ্ধ নৈর্ব্যক্তিক সমন্বয়/ব্যবস্থাপনা: যে কোনো সমন্বয় প্রক্রিয়ার কিছু সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকা উচিত, উল্লেখিত দলিলে এই বিষয়ে কোনও উদ্দেশ্য খুুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। প্রস্তাবিত সমন্বয় প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ:

(ক) ক্রমহ্রাসমান অর্থ সহায়তার সঙ্গে তাল মেলানো, যাতে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী সর্বোচ্চ গুণগতমানের সঙ্গে যথোপযুক্ত পরিমাণ সহায়তা পেতে পারে।

(খ) শান্তি, সামাজিক সংহতি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখা। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা বিরোধী একটি অবস্থান ও মতামত তৈরি হয়েছে, এটি ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। তবে কক্সবাজারে মানবাধিকার বিকাশে বিশ্বাসী একদল স্থানীয় নাগরিক সমাজ রয়েছে, সরকারের নেতৃত্বে আমাদের উচিত তাদেরকে আমাদের পাশে নিয়ে আসা।

(গ) ‘ হোল অব সোসাইটি’ বিকাশের জন্য, বিশেষ করে স্থানীয় বিভিন্ন অংশীজনকে (অর্থাৎ, স্থানীয় সরকার এবং স্থানীয় এনজিও) অন্তর্ভুক্তির সম্ভাব্য সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

(ঘ) সম্ভাব্য সর্বোত্তম প্রযুক্তি এবং জ্ঞান স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় এনজিওগুলিতে স্থানান্তর করা নিশ্চিত করা, যাতে তারা মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রমগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে।

৭. CCNF এই বিষয়ে নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহ রাখতে চায়: এগুলোর বেশিরভাগ নিয়েই জাতিসংঘ এবং আইএসসিজি কর্মকর্তাদের সাথে বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে, এখানে আমরা সেগুলি পুনরাবৃত্তি করছি:

(ক) বিভিন্ন ফোরামে স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিওগুলির প্রতিনিধিত্ব নির্ধারিত হওযা উচিৎ গণতান্ত্রিকভাবে, এটি কার্যক্রমের আওতার উপর ভিত্তি বা এনজিওপির মাধ্যমে হওয়া উচিত নয়। UNRR-এর উচিত IASC নীতি এবং নির্দেশিকা অনুসরণ করে স্থানীয় এবং জাতীয় এনজিওগুলিকে চিহ্নিত করা, তথাকথিত পরিভাষা ‘বাংলাদেশী’ ব্যবহার করার ফলে সৃষ্ট ধোঁয়াশা থাকা উচিৎ নয়।

(খ) রেশনালাইজেশন বা যৌক্তিককরণের নামে, স্থানীয় এনজিওগুলিকে রোহিঙ্গা কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া উচিৎ নয়, কারণ তারা কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে দেশ ও বিদেশ থেকে তহবিল সংগ্রহ করছে। এই বিষয়ে জেআরপি এবং সংশ্লিষ্ট নথিগুলোকে এই বিষয়ে প্রয়োজনে পরিবর্তনযোগ্য হতে হবে। রেশনালাইজেশন গ্রæপে স্থানীয় এনজিও প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত।

(গ) রোহিঙ্গা কর্মসূচি ব্যবস্থাপনায় প্রধান হিসেবে আমরা সবসময় জেলা প্রশাসনের অংশগ্রহণে এবং আরআরআরসি’র নেতৃত্বে একটি একক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দাবি জানিয়ে আসছি। এ বিষয়টি আইএসসিজি ও সেক্টর ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পর্যালোচনা করে দেখা উচিৎ। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে আরআরআরসি এবং আইএসসিজিকে সমান্তরাল কাজ না করে সহযোগী হিসেবে কাজ করতে হবে। প্রতিটি সেক্টরে জেলা পর্যায়ে সরকারি সংস্থাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। রোহিঙ্গা শিবির যেসব এলাকায় আছে, আইএসসিজি’র বিভিন্ন কমিটিতে সেখানকার ইউনিয়ন এবং উপজেলা পরিষদগুলোর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিৎ।

(ঘ) বেশ কিছু বিষয় অনেকদিন ধরেই অমীমাংসিত হয়ে আছে, এই বিষয়গুলোর প্রতি জাতিসংঘ এবং দাতা সংস্থাগুলোর বিশেষ মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন। যেমন (১) রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ১৪টি স্থানীয় পরিবারের বসবাস রয়েছে, এবং তাদের অন্যত্র স্থানান্তরে সহযোগিতা করা উচিত। (২) ক্যাম্পের আওতায় চলে আসা ক্ষতিগ্রস্ত সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির অংশগ্রহণকারীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেতে হবে, (৩) ক্যাম্পে সরবরাহ করার জন্য প্রয়োজনয়ি লবণ এবয় শুটকি মাছ স্থানীয় উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কেনা উচিত, (৪) নাফ নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় আয়ের একমাত্র উৎস হারানো জেলেদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন এবং (৫) UNRR-এর উচিত পরিবেশ পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা ঘোষণা করা, বিশেষ করে প্লাস্টিক পন্য ব্যবহার নিষিদ্ধ করা এবং ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন সীমিত করা।

ঙ) SEG কমিটি লোকালাইজেশন টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করেছিল। UNDP এবং IFRC এর নেতৃত্বে UNHCR, FCDO/UKAid, Oxfam এবং SCI অংশগ্রহণে এই কমিটি প্রায় ২৪ মাস কাজচ করে। তারা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস (সিপিজে) কে মাঠ পর্যায়ে সমীক্ষা পরিচালনা এবং রোহিঙ্গা কর্মসূচির জন্য স্থানীয়করণের একটি রূপরেখা বা রোডম্যাপ তৈরির জন্য দায়িত্ব দেয়। সিপিজে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন ২০২১ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে প্রকাশ করে। UNRR এর উচিত রোডম্যাপের সুপারিশগুলি পরীক্ষা করা এবং সেটি বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়া। ভবিষ্যতে মাঠ পর্যায়ের সকল কার্যক্রম স্থানীয় এবং জাতীয় এনজিওগুলির নেতৃত্বে হওয়া উচিত, এবং জাতিসংঘ এবং আইএনজিওগুলিকে তহবিল সংগ্রহ, মনিটরিং এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে তাদের কার্যক্রম সীমিত রাখা উচিত, তাদের উচিৎ গ্র্যান্ড বার্গেইন ২.০- দেওয়া তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করা, বিশেষ করে স্থানীয় সংস্থাগুলিতে মোট অর্থ সহায়তার ন্যূনতম ২৫% সরাসরি দেওয়া উচিৎ, সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহন হতে হবে মর্যাদাপূর্ণ এবং সকল পর্যায়ে নিশ্চিত করতে হবে স্বচ্ছতা। তাদের নিউ ওয়ে অব ওয়ার্ক এবং চার্টার ফর চেঞ্জ প্রতিশ্রæতিগুলোও পূরণ করা উচিত। আমরা গভীর বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, ইউএনআরআর সমন্বয় দলিলে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিগুলোর বিষয়ে একটি শব্দ বা বাক্যও নেই।

(চ) ২০১৭ সালের অক্টোবরে তৎকালীন ERC মার্ক লু কুকের কাছে সিসিএনএফ HoSoG -এ প্রতিনিধিত্বের জন্য প্রস্তাব করেছিলো, কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম যে এটি এখন অন্যভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, সংশোধিত বা নতুন কাঠামো যাই হোক না কেন, HoSoG এ একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক হিসেবে থাকবে। আমরা আমাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছি, HoSoG-এ স্থানীয় এনজিওগুলির প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত।

(ছ) ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে গ্র্যান্ড বারগেন ফিল্ড ডেমোনস্ট্রেশন মিশন কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগাযোগের মাধ্যমে হিসেবে বাংলা ভাষা ব্যবহার করার বিষয়টি বিবেচনা করার প্রস্তাব দেয়। আমরা মনে করি এটি করা গেলে স্থানীয় এনজিও এবং স্থানীয় সরকার নেতৃত্বের অংশগ্রহণ বাড়াবে।

(জ) আইএনজিও এবং জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থাগুলি কক্সবাজারের জন্য সম্প্রতি বেশকিছু Expressions of Interest (EoI) প্রকাশ করেছে। কিন্তু এই ধরনের বিজ্ঞাপনের ফলে যখন অংশীদারিত্বের জন্য আবেদন করে। কিন্তু যাদের আবেদন গ্রহণ করা হয় না, তাদের আবেদন বাতিলের কারণ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে কোনও পত্র বা ইমেইল প্রেরণ করা হয় না। আবেদনপত্র বাতিলের কারণগুলো জানিয়ে অন্তত একটি পত্র পাঠানো উচিৎ। সুশাসন এবং কার্যকারিতার জন্য এনজিওগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতাকে উৎসাহিত করার জন্য, অংশীদার বা অনুদান প্রদানের লক্ষ্যে কোনও সংস্থা নির্বাচনের জন্য একটি নীতি এবং উন্মুক্ত পদ্ধতি থাকা উচিত। শুধুমাত্র লোকদেখানো প্রতিযোগিতার নামে EoI প্রকাশ করা উচিৎ নয়। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে অংশীদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতিত্বের গন্ধ পাচ্ছি।

Please download the document in [Bangla] [English]

Social Sharing

Comments are closed.